
নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে সারা দেশের জেলা ও মহানগরে পর্যায়ক্রমে সভা-সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী মঙ্গলবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণার দাবিতে এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে এই কর্মসূচি হবে। তিনি আরও বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা এখন প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে। যারা ৫ আগস্টের পরিবর্তনকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি, এমন লোকদের চিহ্নিত করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন।
রিজভী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্ধৃত করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সব পদক্ষেপ সবার কাছে সাফল্য হিসেবে বিবেচিত না–ও হতে পারে। কিন্তু এই সরকারের ব্যর্থতা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির ব্যর্থতা হিসেবেই পরিগণিত হবে। এ কারণে বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল দেখতে চায়। কিন্তু সরকার নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না, এটিও ভাবার বিষয় রয়েছে। সরকারের ‘কর্ম–পরিকল্পনার রোডম্যাপে’ কম গুরুত্তপূর্ণ ইস্যু বাদ দিয়ে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছে এবং ষড়যন্ত্রমূলক অডিও রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একের পর এক উসকানি প্রদান করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানিতে ইতিমধ্যে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সারা দেশে গুপ্ত হামলা, ঝটিকা মিছিল ও গণসংযোগ শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর নারকীয় আক্রমণ চালিয়েছে। ১৫ জনের বেশি গুরুতর জখম হয়েছেন।
পতিত সরকারের গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর ফ্যাসিস্টদের নিয়ে ভার্চ্যুয়ালি মিটিং করে বলেছেন, ‘যে শহরে আমরা দিনের বেলা ঘুরতে পারি না, সে শহরের কাউকে আমরা ঘুমাইতে দেব না।’ আওয়ামী লীগের নয়া প্রজেক্টের মাস্টারপ্ল্যানারদের একজন সে। এমন ভয়ংকর সন্ত্রাসীকে এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতা।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে ষড়যন্ত্রমূলক সভা করছেন বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বেনজীরের গোপনীয় ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসার পরও প্রশাসন নির্বিকার। বেনজীরের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের বিষয়ে যতটা কঠোর হওয়া দরকার ছিল, উল্টো বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি বলেন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই গণহত্যার বিচার হতে হবে। কিন্তু আসামিদের গ্রেপ্তার, জেলে ও দেশের বাইরে রেখে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
বহুল পঠিত
পাঠকের পছন্দে শীর্ষ সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ
মন্তব্য করুন 💬