
গাজীপুরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর তাকে ছাড়াতে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ ও থানার সামনে অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
গণমাধ্যমে এই ঘটনার খবর প্রকাশের সাথে সাথেই দেশজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে, যা এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশেও।
ভারতের সংবাদমাধ্যম "সংবাদ প্রতিদিন" শিরোনামে লিখেছে, “সাপে-নেউলে সম্পর্ক ভুলে সাহায্যের হাত! আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও জামাতের।”
পত্রিকাটি লিখেছে "রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। এবার তার প্রমাণ মিলল ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলায়। বরাবর আওয়ামি লিগ ও জামাত-ই ইসলামির মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক। কিন্ত সেই সম্পর্ক দূরে ঢেলে পুলিশের হাতে আটক আওয়ামি নেতাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও জামাতের নেতাদের। বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।"
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) রাতে গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর বাজার এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে শফিকুল সিকদারকে। তিনি আওয়ামী লীগের মির্জাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক। পুলিশ তাকে থানায় নেওয়ার পর রাত ৮টার দিকে জামায়াতে ইসলামীর শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানার সামনে হাজির হন।
জামায়াতের নেতারা তাকে নিজেদের কর্মী দাবি করে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। থানার ভেতরে তদবির এবং বাইরে বিক্ষোভ চলতে থাকে। তবে থানা পুলিশ তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে।
জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুস সেলিম জানান, শফিকুলের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং তাকে ছাড়া হয়নি।
জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, ২০১৮ সালের পর শফিকুল আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছেড়ে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, অন্য রাজনৈতিক দলের চাপেই তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আওয়ামী লীগের মির্জাপুর ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ডের কমিটিতে শফিকুলকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দেখা যায়। তার নাম অনুমোদিত কমিটিতেও রয়েছে।
এই ঘটনা আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতির অপ্রত্যাশিত মোড়েরই উদাহরণ।
বহুল পঠিত
পাঠকের পছন্দে শীর্ষ সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ
মন্তব্য করুন 💬